আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ শনাক্ত রোগী ও মৃত্যু বাড়তে থাকলেও তিনি প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মার্কিনিদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার নির্দেশ দেবেন না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শুক্রবার ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সবাইকে মাস্ক পরতে বাধ্য করার ভাবনার সঙ্গে একমত নন। কিছুটা স্বাধীনতা থাকা উচিত
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি সবাইকে মাস্ক পরাতে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় নেতাদেরকে ‘প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করার’ আহ্বান জানানোর পর ট্রাম্প এ মন্তব্য করলেন।
মাস্ক পরাকে ‘সত্যিকার অর্থেই খুব গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে ফাউচি বলেছিলেন, “এটা ব্যবহার করা উচিত, সবারই।”
বিবিসি জানিয়েছে, প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মাস্ক পরার নির্দেশনাকে কেন্দ্র করে নানান ধরনের রাজনীতি হয়েছে। যদিও এখন বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যের গভর্নরই উন্মুক্ত স্থানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছেন।
এ গভর্নরদের মধ্যে আলাবামার কে আইভির মতো রিপাবলিকানরাও আছেন, যারা একসময় জোর করে মাস্ক পরানোর বিরোধিতা করেছিলেন।
জর্জিয়ার রিপাবলিকান গভর্নর ব্রায়ান কেম্প অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দাদের আগামী এক মাস মাস্ক পরতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
অঙ্গরাজ্যজুড়ে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার নির্দেশনা না আসায় ওকলাহোমা শহর কর্তৃপক্ষ তাদের আওতায় থাকা এলাকার বাসিন্দাদের কীভাবে স্বাস্থ্যগত নির্দেশনা মেনে মাস্ক পরানো যায় তা বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও দীর্ঘদিন মাস্ক পরেননি; তবে গত শনিবার ওয়াশিংটন ডিসির কাছে একটি সামরিক চিকিৎসা কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে প্রথমবারের মতো তাকে স্বাস্থ্যগত নির্দেশনা মেনে চলতে দেখা গেছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোতে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে।
কোভিড-১৯ মোকাবেলায় হিমশিম খাওয়া টেক্সাস ও ক্যালিফোর্নিয়ার কর্মকর্তাদের সাহায্য করার জন্য সামরিক বাহিনীর কয়েকশ স্বাস্থ্যকর্মীকে ওই দুই অঙ্গরাজ্যে পাঠানো হয়েছে। মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য দেয়া হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রাক।
ফ্লোরিডার হাসপাতালগুলোতে কোনো নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিট খালি না থাকায় অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষ আর কোনো গুরুতর কোভিড-১৯ রোগীকে ভর্তি করা যাবে না বলে জানিয়েছে।
টেক্সাস ও ক্যালিফোর্নিয়াসহ বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্য নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেও স্কুল খুলছে না বলে নিশ্চিত করেছে।
স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে কিনা, দিলে কখন থেকে দেয়া হবে এ নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে তর্ক-বিতর্ক চলছে।
মাঝখানে সংক্রমণের পরিমান কমতে দেখা গেলেও গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফের শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বৃহস্পতিবার দেশটিতে একদিনে রেকর্ড ৭৭ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্যাশবোর্ড অনুযায়ী, শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৬ লাখ ৪৭ হাজার ২৩৭; মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৩৯ হাজার ২৫৫ জনের।