স্টাফ রিপোর্টার ,নওগাঁঃ টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নওগাঁর আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কয়েকটি স্থান ভেঙে রানীনগর, আত্রাই ও মান্দা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এতে প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে কয়েকশ পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ-বান্দাইখাড়া সড়কের আহসানগঞ্জ স্লুইসগেটের দক্ষিণে জাতআমরুল জিয়ানী পাড়ার সামনের সড়ক ভেঙে গেছে।
এর আগে বুধবার সকালে মান্দা উপজেলায় আত্রাই নদীর উভয় তীরের নুরুল্লাবাদ উত্তরপাড়া, জোকাহাট, চকরামপুর-
ও কয়লাবাড়ি এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে মান্দা-আত্রাই আঞ্চলিক সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
আত্রাই নদীর জোতবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় আত্রাই ও ফকিরনি নদীর উভয় তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৫০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
দুই উপজেলার কমপক্ষে নয় ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে কয়েকশ পরিবার। বন্যায় ভেসে গেছে হাজারো পুকুরের মাছ।
মান্দার পাঁজরভাঙ্গা বাজারের অনন্ত কুমার বলেন, বুধবার সকাল ৯টার দিকে পাঁজরভাঙ্গা বাজার হাটের বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়।
বাঁধ ভাঙার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে আমার বাড়ির উঠানে পানি আসে। এরপর গ্রামের অন্যান্য বাড়ি পানিতে ডুবে যায়। আমার এলাকার প্রায় ৩০০ বাড়ি ডুবে গেছে। সেই সঙ্গে শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় চার হাজার ৮৮ হেক্টর জমির ধান ও শাকসবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
এর মধ্যে রোপা আইশ তিন হাজার ২২৩ হেক্টর, বুনো আমন ২০০ হেক্টর, রোপা আমন ৫০ হেক্টর, বীজতলা ৩৭৬ হেক্টর, সবজি ১৪৭ হেক্টর, মরিচ ১১ হেক্টর ও পাট ৮১ হেক্টর।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ বলেন, গত দুইদিনে জেলায় চার হাজার ৮৮ হেক্টর জমির ধান ও শাকসবজি নিমজ্জিত হয়েছে।
তবে পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।এদিকে, বন্যায় কি পরিমাণ পুকুর ডুবে গেছে তার তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে বলে জানান নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ।