আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বিশ্বব্যাপী ভয়াল থাবা বিস্তার করা মারণ ভাইরাস করোনার সংক্রমণ রুখতে কী করবেন আর কী করবেন না এই নিয়ে প্রতিদিনই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ডাক্তাররা গুচ্ছ গুচ্ছ নির্দেশিকা দিচ্ছেন।
কখনো শুরুতে একরকম বলা হচ্ছে পরে সেটা একেবারে বদলে নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে। করোনার সংক্রমণ রুখতে লাইফ স্টাইলে বদল একটা বড় ভূমিকা নিতে-
পারে যাদের জীবনযাত্রা উশৃঙ্খল, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়৷অন্যদিকে,নিয়ম নীতি মেনে যারা জীবন চালান তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেশি হয়। ফলে তারা সহজেই ভাইরাসকে রুখতে পারে।
দ্য কনভারসেশন প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী কোনো মানুষ ঠিক কীভাবে শ্বাস নেয় তার ওপর নির্ভর করতে পারে করোনা সংক্রমণ আটকানো যাবে কিনা৷এই রিপোর্ট অনুযায়ী যারা নাক দিয়ে শ্বাস গ্রহণ করে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়েন তাদের শরীর বেশি ভালো থাকে।
নোবেল পুরস্কার জয়ী ফার্মাকোলজিস্ট লুইস জে ইগনারো ১৯৯৮ সালে মেডিসিনের জন্য নোবেল প্রাইজ পান৷তার গবেষণা অনুযায়ী এইভাবে যারা শ্বাস-প্রশ্বাস নেন-
তাদের ন্যাজাল ক্যাভিটিতে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি হয়৷এই মলিকিউল ফুসফুস গিয়ে রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধি করে, পাশাপাশি রক্তে অক্সিজেনের লেভেল বাড়িয়ে তোলে।
শুধুমাত্র নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া হলে নাইট্রিক অক্সাইড সরাসরি ফুসফুসে পৌঁছে যায়৷এর ফলে করোনা ভাইরাসের ফুসফুসে রেপ্লিকেশন আটকে দেয়৷রক্তে অধিক অক্সিজেন থাকলে মানুষ সতেজ বোধ করে।
মানব দেহ ক্রমাগত নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন করে যা আমাদের দেহের ধমনী এবং শিরাগুলোতে, বিশেষত ফুসফুসের এন্ডোথেলিয়াম গঠনে সহায়তা করে।
এন্ডোথেলিয়াম ধমনীর পেশীগুলি মসৃণ করতে সহায়তা করে যা উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কিত সমস্যাগুলো প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এটি অন্যান্য অঙ্গগুলোতে রক্ত প্রবাহকে বাড়িয়ে তোলে। তা ছাড়াও নাইট্রিক অক্সাইড সাধারণ ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধে সহায়তা করে। ফলে করোনাভাইরাস সহজে ফুসফুস ও ধমনীকে অকেজো করতে পারে না।
করোনা মহামারির কারণে ক্লান্ত ও বিপর্যস্ত মানবজাতি এখন উন্মুখ হয়ে চেয়ে আছে একটা সফল ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধকের। আপেক্ষায় আছেন কখন একটা সুখবর দেবেন বিজ্ঞানীরা।
তবে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটির চূড়ান্ত কোনো প্রতিষেধক কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। আশার কথা প্রায় এক ডজন ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।
তবে যতদিন প্রতিষেধক না আসছে ততদিন আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং সঠিকভাবে শ্বাস নেওয়া উচিত। মনে রাখবেন নাক দিয়ে শ্বাস নিতে হবে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে।