অবরুদ্ধ গাজায় মুহুর্মুহু বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এসব হামলায় অন্তত ১২জন নিহত হয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে যে, তারা ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ আন্দোলনের সদস্যদের লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে।
আল জাজিরার ইউমনা এল সাইদ গাজা থেকে রিপোর্ট করেছেন যে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে যে- গাজা ইসরায়েলের বিমান হামলায় উপত্যকায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া অগণিত সংখ্যক লোক আহত হয়েছেন।
খবরে বলা হয়েছে, সোমবার দিবগত গভীর রাতে গাজার বিভিন্ন অংশে আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট লক্ষ্য করে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। স্থানীয় সময় রাত দুইটার দিকে বিস্ফোরণ শুরু হয়।
এল সাইদ বলেন, ‘নিহত ব্যক্তিদের নাম বা কতজন আহত হয়েছে এটি স্পষ্ট নয়। আমাদের কাছে শুধুমাত্র নিশ্চিত হওয়া গেছে যে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় সর্বশেষ বিমান হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছে।’
তিনি বলেন, যখনই আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়, সেখানে সর্বদা বেসামরিকদের হতাহতের ঘটনা ঘটে।’
ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদ আন্দোলন মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে যে, তাদের তিন নেতা বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন জিহাদ আল-ঘন্নাম, খলিল আল-বাহতিনি এবং তারিক ইজ আল-দীন।
এক বিবৃতিতে তারা বলেছে যে, তিনজনকে তাদের স্ত্রী এবং কয়েকজন সন্তানসহ হত্যা করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আর বিশদ কিছু জানানো হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গাজা শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের উপরের তলায় এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহ শহরের একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে যে, ‘অপারেশন শিল্ড অ্যান্ড অ্যারো’ কোডনাম দেওয়া বিমান হামলায় তিনজন ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ সদস্যকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। তারা ইসরায়েলের দিকে সাম্প্রতিক রকেট নিক্ষেপের জন্য দায়ী বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনি অনশনকারী খাদের আদনান ইসরায়েলি কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনার পর ইসরায়েলি ভূখণ্ডের দিকে রকেট ছোড়ার পরে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ঘনবসতিপূর্ণ গাজা উপত্যকায় আঘাত করে।
ফিলিস্তিন ইসলামিক জিহাদের সাথে সম্পৃক্ত আদনান প্রায় তিন মাস অনশনে থাকার পর মারা যান। ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটি অনুসারে, তার গ্রেফতারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আদনান ৮৭ দিনের জন্য খেতে অস্বীকার করেন।
আল জাজিরার মারাম হুমাইদ জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে ইসরায়েলি বোমা হামলায় আল-সাফিনা, আল-বায়দার এবং আল-জায়তুন পাড়ার কাছাকাছিসহ গাজার একাধিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এসোসিয়েট প্রেস জানিয়েছে, গাজা থেকে ইসরায়েলে বিমান হামলা হতে পারে এই আশঙ্কায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজার ৪০ কিলোমিটারের (২৫ মাইল) মধ্যে থাকা সম্প্রদায়ের ইসরায়েলি বাসিন্দাদের মনোনীত বোমা আশ্রয়কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেসামরিক বিষয়গুলোর সমন্বয়কারী ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি ইউনিট বলেছে যে, গাজার সঙ্গে দুটি ক্রসিং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মানুষ এবং পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা