সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে যুবক রায়হান আহমদ হত্যাকাণ্ডের ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো অধরা প্রধান অভিযুক্ত সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া।
আকবরের অবস্থান সম্পর্কে এখনো অন্ধকারে সবাই।
পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা সাধারণ মানুষ কেউই দিতে পারছেন না আকবরের হদিস। এই অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাতে সিলেট মহানগর পুলিশের নতুন কমিশনার হিসেবে যোগদান করেছেন নিশারুল আরিফ। সিলেটে এসেই রাতে তিনি গিয়েছেন নিহত রায়হানের নেহারিপাড়াস্থ বাসায়। পরিবারের সাথে দেখা করে আশ্বস্থ করেছেন আকবরসহ জড়িত সবাইকে গ্রেফতারের। এ ব্যাপারে সহযোগিতাও চেয়েছেন সবার।
সিলেটে নেমেই রায়হানের পরিবারের সাথে দেখা করা এবং আসামিদের ব্যাপারে নিজের কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করায় এখন সিলেটের মানুষের কাছে আশার প্রদীপ হয়ে দাঁড়িয়েছেন নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনার। রায়হান হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এসআই আকবর হোসেনকে গ্রেফতারে নতুন কমিশনার কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারেন সেদিকেই চেয়ে আছেন সিলেটের মানুষ।
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা থেকে সিলেট আসেন নিশারুল আরিফ। সিলেটে এসে শুরুতেই তিনি হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করেন। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণের আগেই রাত ৮টার দিকে তিনি ছুটে যান নগরীর নেহারীপাড়াস্থ রায়হানের বাসায়। সেখানে তার মা সালমা বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে দেখা করেন। এসময় রায়হানের মা তার ছেলে হত্যার সাথে জড়িত ও প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন এবং এ ব্যাপারে তিনি কঠোর ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। নিহত রায়হানের পরিবারের সাথে সাক্ষাতের পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। এসময় তিনি বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এসআই আকবরসহ যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত ছিল তারা পুলিশ বাহিনীর জন্য কলঙ্ক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নিশারুল আমিন বলেন, ‘রায়হান হত্যাকান্ডের অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনাসহ বিশেষ অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে তিনি সিলেট এসেছেন। সিলেটে যোগদানের আগে স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সেই আলোকে তিনি কাজ করবেন।’ এসআই আকবরকে গ্রেফতারের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, তাকে গ্রেফতারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তাকে কোথাও দেখা গেলে সাধারণ মানুষের উচিত তাকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করা।
কনস্টেবল টিটু কারাগারে:
এদিকে, সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে দুই দফায় ৮ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে তাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সিলেট অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (ভারপ্রাপ্ত) বিচারক জিয়াদুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। এরআগে পিবিআই দুফায় ৩দিন ও ৫দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল। দুপুর আড়াইটার দিকে আদালতের বিচারক কনস্টেবল টিটুকে কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন।