ঢাকা ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিপর্যয় ঠেকাতে বৈশ্বিক সমন্বয়ের আহবান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার :  আর্থিক বিষয়টি গুরুত্ব দিতে বৈশ্বিক সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শনিবার (২৫ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক ডা. টেড্রস অ্যাডহ্যানম জিব্রেইসাসকে লেখা এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমে এ কথা জানান।

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতের যেকোনো বিশ্ব বিপর্যয কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আরও নীতি ও আর্থিক দিকগুলো বৈশ্বিক সমন্বয় এবং সবাইকে বর্তমান এই সংকটকে সতর্কতা হিসেবে বিবেচনার আহবান জানাব।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় থেকেই তার রীতি অনুসারে বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী সকল দেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে বিশ্বাসী বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বহুপাক্ষিকতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। যেহেতু সংক্রামক রোগ এবং মহামারি কোনো সীমানাকে সম্মান করে না, তাই আমরা কোভিড-১৯-এর বিস্তার রোধ করতে এবং সার্বিকভাবে জাতিসংঘের মাধ্যমে এবং বিশ্বব্যাপী ডব্লিউএইচও’র মাধ্যমে আঞ্চলিকভাবে সংযুক্ত হয়েছি। কেননা সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি একটি অভূতপূর্ব সংকট।

এ সময়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতা প্রদানকারী দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি যে, এই মহা বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে ডব্লিউএইচও এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের পাশে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী এই আপদকালীন সময়ে নিরন্তর প্রচেষ্টা এবং নেতৃত্বের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিশ্বাস করি অচিরেই আমরা সম্মিলিতভাবে এই কালো অধ্যায় অতিক্রম করতে সক্ষম হব।

প্রাণঘাতী ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা পরীক্ষা, আইসোলেসনে এবং কোয়ারেন্টাইনে রাখার ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে – যার মধ্যে রয়েছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা, সকল সরকারি ও বেসরকারি অফিস, বাজার (খুব প্রয়োজনীয় বিষয় ব্যতীত) ৪১ দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া এবং এমনকি পবিত্র রমজান মাসেও সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যরা এসব পদক্ষেপের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সর্বশেষ ব্যক্তির কাছে পৌঁছানোর জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের জন্য ২৪ ঘণ্টা কাজ করেছে।

ডাব্লিউএইচও’র কড়া নির্দেশনা অনুযায়ী সরকার ব্যাপক পরীক্ষা ও আইসোলেসন বজায় রাখার ওপর জোর দিচ্ছে এবং সারা দেশে করোনা পরীক্ষার সুযোগ সম্প্রসারিত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পরীক্ষার কিট সংগ্রহ করেছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

উল্লেখ্য, চলতি বছর জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখে চীনে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়। ১১ জানুয়ারি থেকে ২৫ এপ্রিল মাত্র কয়েক মাসেই এই মহামারি করোনায় বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা দু’লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ২১০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস আর এতে আক্রান্ত হয়েছে‍ ২৮ লাখের বেশি মানুষ।

ট্যাগস

বিপর্যয় ঠেকাতে বৈশ্বিক সমন্বয়ের আহবান প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট সময় ১০:৩৬:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার :  আর্থিক বিষয়টি গুরুত্ব দিতে বৈশ্বিক সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শনিবার (২৫ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক ডা. টেড্রস অ্যাডহ্যানম জিব্রেইসাসকে লেখা এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমে এ কথা জানান।

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতের যেকোনো বিশ্ব বিপর্যয কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আরও নীতি ও আর্থিক দিকগুলো বৈশ্বিক সমন্বয় এবং সবাইকে বর্তমান এই সংকটকে সতর্কতা হিসেবে বিবেচনার আহবান জানাব।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় থেকেই তার রীতি অনুসারে বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী সকল দেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে বিশ্বাসী বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বহুপাক্ষিকতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। যেহেতু সংক্রামক রোগ এবং মহামারি কোনো সীমানাকে সম্মান করে না, তাই আমরা কোভিড-১৯-এর বিস্তার রোধ করতে এবং সার্বিকভাবে জাতিসংঘের মাধ্যমে এবং বিশ্বব্যাপী ডব্লিউএইচও’র মাধ্যমে আঞ্চলিকভাবে সংযুক্ত হয়েছি। কেননা সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি একটি অভূতপূর্ব সংকট।

এ সময়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতা প্রদানকারী দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি যে, এই মহা বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে ডব্লিউএইচও এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের পাশে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী এই আপদকালীন সময়ে নিরন্তর প্রচেষ্টা এবং নেতৃত্বের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিশ্বাস করি অচিরেই আমরা সম্মিলিতভাবে এই কালো অধ্যায় অতিক্রম করতে সক্ষম হব।

প্রাণঘাতী ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা পরীক্ষা, আইসোলেসনে এবং কোয়ারেন্টাইনে রাখার ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে – যার মধ্যে রয়েছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা, সকল সরকারি ও বেসরকারি অফিস, বাজার (খুব প্রয়োজনীয় বিষয় ব্যতীত) ৪১ দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া এবং এমনকি পবিত্র রমজান মাসেও সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যরা এসব পদক্ষেপের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সর্বশেষ ব্যক্তির কাছে পৌঁছানোর জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের জন্য ২৪ ঘণ্টা কাজ করেছে।

ডাব্লিউএইচও’র কড়া নির্দেশনা অনুযায়ী সরকার ব্যাপক পরীক্ষা ও আইসোলেসন বজায় রাখার ওপর জোর দিচ্ছে এবং সারা দেশে করোনা পরীক্ষার সুযোগ সম্প্রসারিত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পরীক্ষার কিট সংগ্রহ করেছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

উল্লেখ্য, চলতি বছর জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখে চীনে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়। ১১ জানুয়ারি থেকে ২৫ এপ্রিল মাত্র কয়েক মাসেই এই মহামারি করোনায় বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা দু’লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ২১০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস আর এতে আক্রান্ত হয়েছে‍ ২৮ লাখের বেশি মানুষ।