বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নওগাঁ জেলার ফসলি জমিতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন হাজারো কৃষক। কোথাও আগাম আলুর বীজ পচে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা, কোথাও আবার আধা-পাকা ধান আর শীতকালীন শাকসবজি ডুবে আছে পানিতে। প্রকৃতির এই বৃষ্টিকে ঘিরে কৃষকের কপালে যেন গভীর চিন্তার রেখা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে নওগাঁয় আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে এবং আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে। এরই মধ্যে অনেক কৃষক আগাম আলু রোপণ করে ফেলেছিলেন, কেউবা জমি প্রস্তুত করেছিলেন চাষের জন্য। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে সব হিসাব যেন উলটে গেছে। কোথাও জমিতে হাঁটুসমান পানি, কোথাও সদ্যরোপিত আলুর বীজ পচে গেছে মাটির নিচে।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে—আলুর খেতের পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মরিচ, বেগুন, মুলাসহ নানা শীতকালীন সবজি। অনেক ক্ষেতেই গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। যেসব জমিতে এখনো সবজি টিকে আছে, সেসব খেতে প্রাণপণে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন কৃষকরা।
নওগাঁর নলগাড়া এলাকার কৃষক রেজাউল করিম জানান,
“অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো। ৫ বিঘার মধ্যে ৩ বিঘা ধান এখন পানির নিচে। আগামী সপ্তাহে ধান কাটার কথা ছিল, এখন সব অনিশ্চিত।”
আরেক কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন,
“কয়েকদিন আগে আলুর বীজ রোপণ করেছি। এখন টানা বৃষ্টি আর মেঘলা আকাশ। আলুর বীজে সামান্য পানি জমলেও পচে যায়। এখন দেখি অধিকাংশ ক্ষেতেই সেই আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।”
অন্যদিকে, কৃষকরা বলছেন—গত বছর আলুর দাম না পাওয়ায় এবছর আগাম আলু চাষে জোর দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি যেন সব আশা ভাসিয়ে নিচ্ছে পানির স্রোতে। মাঠে জমে থাকা পানি দ্রুত না সরলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হবে।
তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হোমায়রা মন্ডল কিছুটা আশার বাণী শোনালেন। তিনি বলেন,
“বৃষ্টি হলেও ভারী বর্ষণ হয়নি। যেসব জমিতে আলু লাগানো হয়েছে ৮-১০ দিন আগে, সেগুলোর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কম। খেত থেকে পানি নেমে গেলে সমস্যা থাকবে না।

স্টাফ রিপোর্টার নওগাঁ: 











