রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে জাতিগত সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার হামলার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং এরইমধ্যে এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে বাংলাদেশে জাতিগত বিদ্বেষ ও ধর্মান্ধতার কোনো স্থান নেই। সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করা হলে সরকার তা কঠোর হাতে দমন করবে ।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি নামক একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে আসা লোকজন এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ব্যানারে আসা একদল লোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করে মতিঝিলে এনসিটিবি কার্যালয় ঘেরাও করার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরে এনসিটিবি ভবনের সামনে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির ব্যানারে থাকা লোকজন আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় নারীসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ভ্যান-রিকশায় করে সরিয়ে নেয়া হয় চিকিৎসার জন্য। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নবম ও দশম শ্রেণির ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ থাকা একটি গ্রাফিতি যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এর প্রতিবাদ জানিয়ে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি। এরপর সরকার সেটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং পাঠ্যবইয়ের পিডিএফ সংস্করণ থেকে সেটি সরিয়ে নতুন একটি গ্রাফিতি সংযুক্ত করা হয়।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পুনর্ব্যক্ত করছে যে, বাংলাদেশে জনতার সহিংসতা, জাতিগত বিদ্বেষ এবং গোঁড়ামির কোনও স্থান নেই। সরকার সতর্ক করে দিচ্ছে যে সম্প্রীতি, শান্তি এবং আইনশৃঙ্খলার ক্ষতি করে এমন কার্যকলাপে জড়িত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে বৈষম্য ছাড়াই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।