সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মোট দুটি মামলা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার মেহেদীর পিতা ছানাউল্লাহ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) একটি মামলা করেন। এর আগে ১৪ আগস্ট আরও একটি মামলা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় করা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩ (২) ও ৪ (১), ৪ (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
- এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) আতাউর রহমান শনিবার (১৭ আগস্ট) বলেন, আমরা অভিযোগ গ্রহণ করেছি। দুটি মামলার তদন্তই একসঙ্গে হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে পাঠানো হবে। শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় আসামি করা হয়েছে- সাবেক সেতুমন্ত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং তৎকালীন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যকে।
এছাড়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও কয়েকজন অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা এবং র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও কয়েকজন অসাধু র্যাব কর্মকর্তা এবং সদস্যসহ অজ্ঞতনামা অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী।
আর সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনসমূহের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। একটি মামলার আবেদনে গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনার তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ওই সময়ে আহত হয়ে পরবর্তী সময়ে নিহতরাও এর আওতায় থাকবে। ঘটনার স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সমগ্র বাংলাদেশকে।
এতে বলা হয়, ১ থেকে ৯ নং আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। অন্য মামলার আবেদনে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে চিটাগং রোডের হিরাঝিল এলাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, গত ২০ জুলাই মেহেদী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রজনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেয়। আন্দোলনরত অবস্থায় আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে। একপর্যায়ে মেহেদীর মাথায় গুলি লেগে মগজ বের হয়ে যায় এবং সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মৃত্যুবরণ করে। ঘটনা শুনে বাদী ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদীর লাশ দেখতে পান।