রাজধানীর ভাটারা থেকে এক কলেজছাত্রকে অপহরণের মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একজন কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম আমেনুল মোমেনীন (২৮)। গতকাল শুক্রবার জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ভাটারা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
আমেনুল মোমেনীন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শনিবার তাঁর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।
ওই কলেজছাত্রের নাম নোমান হোসেন। তাঁকে অপহরণের অভিযোগে আজ আমেনুল মোমেনীনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বাকি চার আসামি হলেন ভাটারা এলাকার মো. তুহিন (২৮), মো. রাতুল (২০), মো. আরিফ (৩০) ও মো. লিটন (২৫)। তাঁরা সবাই পলাতক।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মইনুল ইসলাম বলেন, ভাটারা এলাকায় নোমান হোসেন নামের এক তরুণকে অপহরণের অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবল আমেনুল মোমেনীনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মামলার এজাহারে নোমানের মা লিজা আক্তার বলেছেন, গতকাল ভোর সাড়ে পাঁচটায় তাঁর ছেলে নোমান ভাটারায় নানির বাসার উদ্দেশে বের হন। নোমান এক বন্ধুর সঙ্গে মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে পুলিশ পরিচয়ে তাঁদের থামানো হয়। সেখান থেকে নোমানকে তুলে নিয়ে ভাটারার নূরের বাজার রোড এলাকায় আমেনুলের সহযোগী তুহিনের বাসায় আটকে রাখা হয়। সেখানে মারধর করে তাঁর কাছে থাকা পাঁচ হাজার টাকা ও একটি মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়।
লিজা আক্তার বলেন, প্রথম ধাপে টাকা ও মুঠোফোন নেওয়ার পর নোমানের কাছে আরও টাকা চাওয়া হয়। তখন নোমান জানান, তাঁর কাছে টাকা নেই। পরে টাকা নেওয়ার জন্য নোমানকে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের বাসায় গিয়ে নিজেকে পুলিশ সদস্য বলে পরিচয় দেন আমেনুল। একপর্যায়ে তিনি (নোমানের মা) চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন বাসায় গিয়ে আমেনুলকে আটক করেন। পরে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দিলে ভাটারা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমেনুলকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
ভাটারা থানা-পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে আমেনুল স্বীকার করেছেন, তিনি পুলিশের সদস্য। কনস্টেবল হিসেবে তিনি ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগের গুলশান-২–এ কর্মরত। ২ মাস ১০ দিন আগে ছুটিতে গিয়ে তিনি আর কর্মস্থলে যোগ দেননি। এদিকে কলেজছাত্র নোমানকে অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগ আমেনুল অস্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী শাহ আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মক্কেল পরিস্থিতির শিকার। তিনি অপহরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
ভাটারা থানার ওসি কাজী মইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নোমান হোসেনকে অপহরণের ঘটনায় কনস্টেবল আমেনুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অপর চার আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।