পুতিন এতদিন ধরে বলে আসছিলেন ইউক্রেনের উপর হামলাটা ‘স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন’-এর বেশি কিছু নয়। তবে রাশিয়াতেই বহু মানুষ এই ‘স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন’ তত্ত্বের বিপক্ষে, তাঁরা ঘটনাচক্রে পুতিনেরও বিপক্ষে চলে গিয়েছেন।
ইউক্রেন হামলার প্রায় ১ বছর হতে চলল, কিন্তু ইদানীং যেন ক্রমশ বিনয়ের অবতার হয়ে উঠছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কখনও তাঁর কথা শুনে মনে হচ্ছিল, বোধ হয় এই হামলা থেকে সরে আসবেন, কখন মনে হচ্ছিল বিরতি দেবেন বা হামলার ঝাঁজ কমাবেন। এ তো গেল একদিকের কথা।
আর একদিনের কথা হল, পুতিন এতদিন ইউক্রেনে রাশিয়ার এই হামলাকে কোনওভাবেই যুদ্ধের মর্যাদা দিতে চাননি।
দু’দেশেরই বহু সেনা মারা গিয়েছেন, দুদেশের বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এটাকে নিছক হামলার মোড়কেই রেখে দিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে অনেক ধানাইপানাই তিনি করেছেন। কিন্তু অবশেষে তিনি স্বীকার করে নিলেন ইউক্রেন আক্রমণের এই ঘটনা আদতে যুদ্ধই!
পুতিন এতদিন ধরে বলে আসছিলেন ইউক্রেনের ওপর এই হামলাটা ‘স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন’-এর বেশি কিছু নয়। রাশিয়ার মধ্যেই বহু মানুষ এই ‘স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন’ মতের বিপক্ষে, তাঁরা ঘটনাচক্রে পুতিনেরও বিপক্ষে চলে গিয়েছেন। তিনি যে সরাসরি বিষয়টিকে যুদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন, তা অবশ্য নয়।
ইউক্রেনের উপর এই হামলা বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে পুতিন বলেন,’মিলিটারি কনফ্লিক্ট নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়াটা আমাদের লক্ষ্য নয়, তবে আমরা যুদ্ধটা শেষ করতে চাই। আর এটার জন্য আমাদের অনেকদিন ধরে চেষ্টা চলছে।’ এই বক্তব্যেই তিনি প্রথম ‘যুদ্ধ’ কথাটা ব্যবহার করেন। কিন্তু ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, ইউক্রেন আক্রমণের সকালে পুতিন এই ‘স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন’ কথাটা ব্যবহার করেছিলেন
রাশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই যুদ্ধবিরোধী কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিল। যুদ্ধে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এমন সেনার শোকার্ত পরিবারর সঙ্গে এর আগে একবার দেখাও করেছিলেন পুতিন। সন্তানহারানো মায়েদের সান্ত্বনা দিয়েছেন তিনি। তাঁদের বুঝিয়েছেন, দেশের জন্য তাঁদের সন্তানদের এই আত্মত্যাগ খুবই মহৎ একটা বিষয়, এর জন্য দুঃখ করা মানায় না।
যদিও যুদ্ধের জন্য স্বজন-হারানো পরিবারগুলি প্রেসিডেন্টের সান্ত্বনাবাক্যে সেদিন সান্ত্বনা পাননি। হয়তো সেটা কোনও ভাবে বুঝেওছিলেন তিনি।