কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের জনসভা আজ বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে। সৈকতের লাবণী পয়েন্টে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জনসভার সব আয়োজন শেষ। বিকেল ৩টায় জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর পর কক্সবাজার সফরে আসছেন তিনি।
জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকে মিছিল নিয়ে শেখ কামাল মাঠে আসছেন বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। তাদের স্লোগানে মুখরিত জনসভাস্থল। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পৌর শহরের সড়কগুলোতে আছে নিরাপত্তাকর্মীদের অবস্থান।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান, বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে সার্বিক নিরাপত্তার প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। নেওয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়। যেখানে দায়িত্বপালন করছেন চার হাজারের বেশি পুলিশ। কক্সবাজারসহ আশপাশের চারটি জেলা থেকে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালনের জন্য কক্সবাজারে আনা হয়েছে।’
বুধবার সকালে বঙ্গোপসাগরে ইনানী অংশে অনুষ্ঠিত ৩০ বন্ধু প্রতিম দেশের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নৌ শক্তি মহড়া উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে কক্সবাজার শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। জনসভার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পুরো কক্সবাজার শহর ছেয়ে-গেছে ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। দলীয় নেতাকর্মীরা আশা করছেন, এবারের জনসভাটি স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগমে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে ভ্যানে নৌকা নিয়ে সারা শহর প্রদক্ষিণ করেছে প্রাক্তন ছাত্রলীগ পরিষদ।
সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্য মতে, প্রধানমন্ত্রী দলীয় জনসভায় ২৮টি বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং নতুন কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে স্ব-প্রণোদিত হয়ে অপেক্ষা করছে উপজেলা ও উপকূলের হাজারো নেতাকর্মী এবং শ্রমজীবী। গৃহহীন যারা ঘর পেয়েছেন, বয়স্কভাতা যারা পেয়েছেন, লবণের ন্যায্যমূল্য পাওয়া চাষি পরিবারের লোকজন কৃতজ্ঞতা ও প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি একনজর দেখতে সভাস্থলে যেতে প্রস্তুতি নিয়েছেন।
চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে নতুন করে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল সংযুক্তিকরণ, কক্সবাজারের সাথে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও বাঁকখালী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ, কুতুবদিয়া মগনামায় ফেরি সার্ভিস চালুকরণ, কক্সবাজার পর্যটন গবেষণা ইনস্টিটিউট, চার লেনের মেরিন ড্রাইভ সড়ক, ছয় লেনের কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কক্সবাজার সিটি করপোরেশন, কক্সবাজার সিটি কলেজকে সরকারিকরণের দাবি জানানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম বলেন, মহেশখালী দ্বীপ, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়া থেকে হাজারো মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে এবং তার ভাষণ শুনতে মঙ্গলবার বিকেল ও রাতে কক্সবাজার চলে এসেছেন। আশপাশের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সকাল থেকে আসতে শুরু করেছেন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ‘না চাইতেই প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারবাসীকে অনেক কিছু দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা জানানোর মাধ্যম হিসেবে এবারের জনসভায় সর্ববৃহৎ জনসমাগম ঘটাতে আওয়ামী লীগ সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে।’