নওগাঁর বরেন্দ্র এলাকায় মওসুমের শুরুতেই সার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ী ও ডিলারদের বিরুদ্ধে । কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সারের বস্তা প্রতি আড়াই শো থেকে ৩শ টাকা বেশি নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা । তবে কৃষি বিভাগ বলছে জেলায় সারের মজুদ রয়েছে পর্যাপ্ত ।
যারা সংকট তৈরি করে কারসাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারী কৃষি কর্মকর্তার ।নওগাঁ সদর উপজেলার শ্যামপুর নদী চড়ে দু সপ্তাহ আগে বোপন করা আলু বীজ থেকে গজিয়ে উঠা সতেজ চারা গুলো যতই বড় হচ্ছে ডানা মেলছে চাষীর স্বপ্নও । নিবির পরিচর্যায় স্বপ্নের ফসলে চাষী আলাউদিনের মতো অনেকের দু:চিন্তা চড়া দরে কেনা সার আর ফসলে বাড়তি খরচে কাংখিত দাম পাওয়া নিয়ে ।
সরকার প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দর ২২ টাকা বেঁধে দেয় । কিন্ত নওগাঁর মাঠ পর্যায়ে মিলছে না চাহিদা মতো সার । যদিও কিছু দোকানে সার মিলছে তবে নানা সংকট দেখিয়ে ২২ টাকার সার ২৫ থেকে ২৭ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে চাষীদের ।
জেলা কৃষি বিভগের তথ্য বলছে ডিএপি, এমও পি ও ইউরিয়া সারের এ জেলায় বাৎসরিক চাহিদা ১ লক্ষ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন । দাফতরিক কাগজে সারের কোন সংকট না থাকলেও মাঠ পর্যায়ের চিত্র অনেকটা ভিন্ন । চাষীদের অভিযোগ ব্যবসায়ী ও ডিলারদের কারসাজিতে চড়া দরে সংগ্রহ করতে হচ্ছে সার । নওগাঁ সদর উপজেলার চাকলা গ্রামের চাষী আব্দুল জব্বার জানান, ১০ কাটা জমিতে আলু লাগানোর সময় ২ ধারা (১০) কেজি ইউরিয়া সার ১৩০ টাকায় কিনে জমিতে দিয়েছি । কিন্ত সেচ দেওয়ার পর আরো অন্তত ৩০ বার সার দিতে হবে । বাড়তি দরে সার কিনতে হিমসিম খাওয়া কথা জানান একাধিক কৃষক ।
বিএডিসি ২০৫ ও বিসি আইসির ১২৭ নিবন্ধিতত ডিলার জেলায় সার সরবরাহের কাজ করছে । সার উত্তোলন ও সরবরাহে নানা অজুহাতে অধিক দাম নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এসব ব্যবসায়ীরা বিরুদ্ধে । তবে ব্যবসায়ী নেতার দাবী সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে অসাধু খুচরা ব্যবসায়ীরা । ফার্টিলাইজার এসোশিয়েশন নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি মো: রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা নজর রাখছি যারা বেশি দরে সার বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে । নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ- পরিচালক মো: আবু হাসান বলেন, আসলে সারের কোন সমস্যাই নেই । মানুষ বাড়তি সার সংগ্রহ করছে । আর এ কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে । তবে অধিক মুনাফার যারা সুযোগ নিবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া নেওয়ার হুশিয়ারী দেন তিনি ।
চলতি মওসুমে জেলায় ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে রবি ফসল ও ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের বিপরিতে সারের বরাদ্ধ ধরা হয়েছে ৮৩ হাজার মেট্রিক টন ।