কক্সবাজারের মহেশখালীর শহিদুল হক বহদ্দারের ট্রলারে একসঙ্গে আটটি পোপা (স্থানীয় ভাষায় কালো পোয়া) মাছ ধরা পড়েছে। মাছগুলোর দাম হাঁকা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। আর মাছগুলোর প্রত্যেকটির ওজন ৩০ থেকে ৪০ কেজির মতো।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে মাছগুলো নিয়ে ফিশিং ট্রলারটি মাতারবাড়ি উপকূলে আসে। শহিদুল হক বহদ্দার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের জেলেপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
ট্রলারের মাঝি আব্দুল মজিদ বলেন, মাতারবাড়ি জেলেপাড়ার শহিদুল হক বহদ্দারের মালিকানাধীন এফবি মা-বাবার দোয়া ট্রলার নিয়ে আমরা সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। সোমবার সকালে বঙ্গোপসাগরে জাল ফেলে দুপুরে যখন জাল তুলি, তখন একসঙ্গে আটটি বড় পোয়া ধরা পড়ে। মাছগুলো বোটে তুলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কূলে ফিরে আসি আমরা।
ট্রলারে থাকা শহিদুল হক বহদ্দারের ছোট ভাই একে খান বলেন, বঙ্গোপসাগরে যাওয়ার পর হঠাৎ আমাদের জালে মাছগুলো ধরা পড়ে। এ ঘটনায় বোটে থাকা সবার চোখেমুখে হাসির ঝিলিক এনে দিয়েছে। ঘাটে নৌকা বেঁধে পাড়ায় আসার আগে উপকূলেই বড় মাছ ধরা পড়ার খবরটি প্রচার হয়ে যায়। স্থানীয় পাইকাররা এসে মাছগুলো কিনতে জড়ো হন। খবর পেয়ে চট্টগ্রাম আড়তের বড় ব্যবসায়ীরাও মাছগুলো কিনতে যোগাযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, মাছগুলোর দাম আমরা ২৫ লাখ টাকা চেয়েছি। স্থানীয় পাইকার কয়েকজন মিলে মাছগুলো ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছে। চট্টগ্রামের পাইকাররা আরও বেশি মূল্য দিতে রাজি হওয়ায় মাছগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। মাছ নিয়ে কয়েকজন মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে। ভালো দামে বিক্রি করা গেলে এ সিজনের মতো খরচ পুষিয়ে লাভের মুখ দেখাবে মাছগুলো। বিক্রির পর একটি অংশ মসজিদ-মাদরাসায় দান করা হবে।
মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম হায়দার বলেন, অদৃশ্যের ভাগ্য কখন কীভাবে সুপ্রসন্ন হয় একমাত্র আল্লাহপাক জানেন। শহিদুল বহদ্দারের ভাগ্য খুলেছে। এক দিনেই আল্লাহ তাকে কয়েক লাখ টাকার সংস্থান করে দিয়েছেন। এর আগে গত বছরে মাতারবাড়ি উপকূলে সৈয়দ বহদ্দার ১৬টি পোয়া মাছ পেয়েছিলেন, যা তিনি ১৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেন।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান বলেন, এ মাছের মূল আকর্ষণ পেটের ভেতরে থাকা পদনা বা বায়ুথলি (এয়ার ব্লাডার)। এই বায়ুথলি দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি করা হয়। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ মাছের চাহিদা আছে। এজন্য পোপা মাছের দাম চড়া পাওয়া যায়।
চলতি মাসে সেন্টমার্টিনে আবদুল গণি নামে এক জেলে তিনটি পোয়া মাছ পেয়েছিলেন, যা বিক্রি করে তিনি প্রায় ৯ লাখ টাকা পেয়েছেন। মাসের শেষদিকে এসে মাতারবাড়ির শহিদুল হক বহদ্দারের জালে একসঙ্গে আটটি পোয়া মাছ ধরা পড়লো।