আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দেশে একজনও করোনা রোগী নেই বলে এতদিন জোর গলায় দাবি করে আসছিল উত্তর কোরিয়া। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা দারিদ্র্যপীড়িত দেশটি সম্ভবত সংক্রমণ শনাক্ত করতে পারছে না; সেখানে প্রাদুর্ভাব শুরু হলে তা ভয়াবহ প্রাণঘাতী হতে পারে।
অবশেষে করোনা মোকাবেলায় উদ্যোগ নিয়েছে কিম জং উনের দেশ। হাঁপানি ও সাধারণ সর্দি-কাশির লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিদেরকে কোয়ারেন্টিন করার আদেশ দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার জাপানি গণমাধ্যম সানকেই শিম্বুনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মোকাবেলায় উত্তর কোরিয়া হাঁপানি ও সাধারণ সর্দি-কাশির লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিদেরকে কোয়ারেন্টিন করার সিদ্ধান্ত এপ্রিলের শুরুতেই নিয়েছিল।
১১ ই এপ্রিল পলিটব্যুরোর এক বৈঠকের পরে কিম জং উনের আকস্মিকভাবে নিখোঁজ হওয়ার সময়ের সাথে এই সিদ্ধান্তের সময়কালের মোটামুটি মিল রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্বাসিত একজন পুরুষ উত্তর কোরিয়ার খেলোয়াড় সানকেই শিম্বুনকে বলেছে যে, তিনি উত্তর হামজিয়ং প্রদেশসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরতদের সূত্রের সাথে কথা বলে কোয়ারেন্টিনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।
বিশ্বের ধনী ও উন্নত দেশগুলো যেখানে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের মোকাবেলায় নাকানি-চুবানি খাচ্ছে, সেখানে উত্তর কোরিয়ার মত দরিদ্র ও দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার দেশ ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়লাভের দাবি করেছে।
তারা বলেছে প্রাদুর্ভাবের আগে চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও বিনিময় সত্ত্বেও দেশে কোনো কভিড -১৯ সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। যদিও এটি বাস্তবে সম্ভব কিনা তা নিয়ে বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলেছিলেন।
উত্তর হামজিয়ং প্রদেশের মুসানের একটি সূত্র জানিয়েছে, একজনও করোনা রোগী নেই এটা মিথ্যা। উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে দেখানোর জন্য সেখানে সন্দেহজনক রোগীদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ঠাণ্ডাজনিত রোগ বা হাঁপানির লক্ষণগুলো দেখা গেলে তাদের জোর করে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে।
উত্তর কোরিয়ায় কার্যকর কভিড-১৯ টেস্টিং সুবিধা না থাকায় এই পদক্ষেপগুলো আরো বিভ্রান্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে। দেশটির কাছে কভিড -১৯ রোগীদের চিহ্নিত করার কোনো উপায় নেই বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা্র দুর্বলতার কারণে সেখানে করোনা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দারিদ্র্যপীড়িত ওই দেশটি সম্ভবত সংক্রমণ শনাক্ত করতে পারছে না; সেখানে প্রাদুর্ভাব শুরু হলে তা ভয়াবহ প্রাণঘাতী হতে পারে।
চীনের উহানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর প্রতিবেশী এই দেশটি সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। করোনার বিস্তার ঠেকাতে ব্যাপক বিধি-নিষেধ আরোপের পাশাপাশি করোনা সংক্রমিত দেশগুলোর থেকে আসা বিদেশিদের জন্য ৩০ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করে উত্তর কোরিয়া। সূত্র- সানকেই শিম্বুন।