মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরায় করোনা ভাইরাস নিয়ে প্রতিবেশীদের রসিকতায় ভয় পেয়ে আতঙ্কে আসলাম হোসেন (৩৫) নামে এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷
সোমবার (২৩ মার্চ) সদর উপজেলার বেরইলপলিতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ইলিয়াস হোসেন ওই গ্রামের মৃত আকরাম হোসেন মোল্যার ছেলে।
আসলামের বড় ভাই আবদুর রহমান জানান, দুই ছেলে মেয়ের জনক আসলাম খুবই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতেন। পরিবারে স্ত্রী বা অন্য কারো সঙ্গেই তার কোনো বিরোধ ছিলো না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে ছাগল বাঁধার জন্যে মাঠে যান। সেখানে বাগানের মধ্যে একটি মেহগনি গাছে উঠে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
মৃতের চাচাতো ভাই মাগুরা সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হক রাজা বলেন, গত চার দিন ধরে সে সাধারণ জ্বরে ভুগছিলো। এতে তার মনে কারোনা ভাইরাস আক্রান্তের ভয় সৃষ্টি হয়।
কদিন থেকেই প্রতিবেশীরা কেউ কেউ তাকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এমন রসিকতা করে ভয় দেখায়। কিন্তু সেই রসিকতা বুঝতে না পেরে অত্যন্ত সহজ-সরল আসলাম স্থানীয় গ্রাম্য দুই ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে একইসঙ্গে দুইজনের দেওয়া ওষুধ সেবন করে।
এতে তার জ্বর সেরে গেলেও মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়।
প্রতিবেশীদের ভাষায় করোনায় আক্রান্তদের পুলিশ ধরে নিয়ে গুলি করে মেরে ফেলছে এমন সব ‘আতঙ্ক’ ছিলো তার মনে। ফলে আতঙ্কিত হয়ে সে আত্মহত্যা করে বসেছে বলে ধারণা আমাদের।
এ বিষয়ে বেরইল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ পরিদর্শক (এসআই) বিশ্বজিত জানান, এলাকার মানুষ নানা কথা বলছে। আসলাম হোসেনের আত্মহত্যার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত।
কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মতো কোনো ‘উপসর্গ’ তার শরীরে ছিল না। প্রতিবেশী কেউ বিদেশ থেকে আসেনি, এই এলাকায় কেউ হোম কোয়ারেন্টিনেও নেই।
এদিকে তার এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারাও তার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী দুপুরে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মাগুরা সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, আসলাম হোসেনের জ্বর থাকলেও করোনা ভাইরাস রিলেডেট কোনো রোগী তিনি নন। সে ধরনের কারো সঙ্গে তার কোনো কন্ট্রাক্টও ছিল না। তারপরও বিষয়টি নিয়ে আইইডিসিআরের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে আলাপ করেছি।